বর্তমানে বাংলাদেশে স্বাস্থসেবা নিয়ে জনগণের মাঝে নানান রকম অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা পত্র পত্রিকায় বিভিন্ন হাসপাতালের ভুল চিকিৎসা , আজগুবি রিপোর্ট, অতিরিক্ত বিল আদায় সম্পর্কিত বিভিন্ন রিপোর্ট দেখতে পাই। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯ প্রণয়নের আগে চিকিৎসক, নার্স,হাসপাতাল কতৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষমতা বি.এম.ডি.সি এবং স্বাস্থ অধিদপ্তরের হাতে ছিল। ভোক্তা অধিকার আইন ২০০৯ প্রণয়নের পর ভোক্তা অধিকার কতৃপক্ষ এবং নির্বাহি ম্যাজিস্ট্রেটের হাতেও হাসপাতালের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। ভোক্তা অধিকার আইনের সংজ্ঞার ভিতরে স্বাস্থসেবা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এবং এর মাধ্যমে স্বাস্থসেবা খাত যেমন: হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়গনস্টিক সেন্টার, ডাক্তারের প্রাইভেট প্রাকটিস ইত্যাদি ভোক্তা অধিকার আইনে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ভোক্তা অধিকার আইনে হাসপাতাল বা ডায়াগনিস্টিক সেন্টারের বিভিন্ন অপরাধের জন্য বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তির ব্যবস্থা আছে। উদাহরণ স্বরূপ ৫২ ধারায় বলা আছে সেবা গ্রহিতার জীবন ও নিরাপাত্তা বিপন্নকারী কার্য করিবার দণ্ড, ৫৩ ধারায় বলা আছে অবহেলা ইত্যাদি দ্বারা সেবা গ্রহীতার সেবা গ্রহীতার অর্থ, স্বাস্থ, জীবনহানি ইত্যাদি ঘটাইবার দণ্ড। অর্থাৎ কোনো হাসপাতাল বা ক্লিনিকে সেবা নিয়ে যদি কেউ ক্ষতিগ্রস্থ হয় তাহলে সে ভোক্তা অধিকার আইনে অভিযোগ করতে পারে এবং এক্ষেত্রে ৩ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং অর্থদন্ডের ও বিধান রয়েছে। তবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কতৃপক্ষ কোনো হাসপাতাল বা ক্লিনিকে অভিযান পরিচালনার ক্ষেত্রে এবং প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে স্বাস্থ অধিদপ্তর কে অবিহিত করা পূর্বক স্বাস্থ অধিদপ্তরের প্রতিনিধি সঙ্গে থাকতে হবে। ইতিমধ্যে আমার কিছু হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করতে দেখেছি। ভবিষ্যতে এই রকম আরো অভিযান স্বাস্থ ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা আনতে সাহায্য করবে বলে আশা করা যায়।
ব্যারিস্টার সানোয়ার হোসেন
এডভোকেট , বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
ইমেইল : shossainlaw@hotmail.com